রীতিমেনে কাঠামো পুজোর মধ্যদিয়ে শুরু হলো হাসনাবাদ ঘোষ জমিদার বাড়ির তিনশতপাঁচ বছরের পুরানো দুর্গাপুজোর, দেবীমূর্তি গড়ার কাজ।
সৌরভ দাশ,হাসনাবাদ:( উত্তর চব্বিশ পরগনা)
রথের দড়ি তে টানের সঙ্গে সঙ্গে দুর্গাপুজোর বাদ্যি বেজে গেলো।প্রথামতো কাঠামো পুজোর মধ্যদিয়ে শুরু হলো দেবীদূর্গার আগমনের প্রহর গোনা । বিভিন্ন বনেদী বাড়ির পুজো কিংবা বারোয়ারি পুজো, রবিবার অনেক জায়গাতেই কাঠামো পুজোর মধ্যদিয়ে দেবী মুর্তি গড়ার কাজ শুরু হলো।
উত্তর চব্বিশ পরগনার হাসনাবাদের রামেশ্বরপুর ঘোষ জমিদার বাড়িতেও কাঠামো পুজোর মধ্যদিয়ে শুরু হলো তিনশতাধিক বছরের পুরানো দুর্গাপুজোর কাজ।
ওপারে বাংলাদেশ এপারে হাসনাবাদ, মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে ঈছামতী নদী।ঈছামতীর কোল ঘেঁষে ঘোষেদের জমিদার বাড়ি।প্রতি বার ই জাঁকজমক পূর্ন দূর্গা পুজোয় পার্শ্ববর্তী গ্রাম থেকে প্রচুর মানুষ ভিঁড় করেন প্রাচীন এই জমিদার বাড়িতে।ঘরে ফেরেন প্রবাসী পরিজন রাও।
জমিদারী প্রথা মেনেই প্রতিবছরের মতো এবারও রথ যাত্রার দিনে কাঠামো পূজা হলো রামেশ্বর পুর ঘোষ বাড়িতে।
ঘোষ জমিদার বাড়ির সদস্যরা জানান, প্রথা মেনে প্রতি বছর রথের দিন কাঠামো পূজা হয়,তার পর থেকে ঠাকুর দালানেই চলে প্রতিমা তৈরির কাজ।ইংরেজ শাসন কাল থেকে চলে আসছে এই প্রথা।ভগ্নপ্রায় জমিদার বাড়ির পাশেই রয়েছে রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও তুলসী মন্দির।মহালয়ার পর দিন থেকেই পুজা শুরু হয় ঘোষ বাড়িতে।শ্রাবন ও ভাদ্র মাসের শুক্ল পক্ষে বৃষ্টির জল সংগ্রহ করা হয় পরে সেই বৃষ্টির জলের সন্গে গঙ্গাজল মিশিয়ে দেবী দুর্গা কে স্নান করানো হয়।ষষ্ঠীর দিন সোনার গহনায় সেজে ওঠেন মাতৃ মূর্তি, দশমীর দিন বিশেষ প্রথা মেনে দেবীকে স্নান না করিয়ে ই বিসর্জন দেওয়া হয় ঈছামতীর জলে।সেই প্রথা মেনে আজও ঘোষ বাড়ির কোনো গৃহবধূ বাপের বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়ি আসলে স্নান না করেই আসেন।এক সময় এটিই ছিলো এলাকার একমাত্র পুজো,বাড়ির বর্তমান সদস্য রা জানান মন্দির টি প্রথমে গোলপাতার ছাউনি ও বাঁশের তৈরি ছিলো পরবর্তী সময়ে তা মাটি র ও পরে ক্রংকিটের তৈরি হয়।তরুন মজুমদার পরিচালিত নিমন্ত্রন ছবির শুটিং হয়েছিলো সীমান্ত লগোয়া এই জমিদার বাড়িতেই।
জমিদারি প্রথার অবসান হওয়ার পর বহরে কমলেও পুজোর আভিজাত্যে এতটুকু ছেদ পরেনি বলে জানান তিনি।গত কয়েকবছরে ঘোষ জমিদার বাড়ির নতুন প্রজন্মের হাত ধরে পুজো ঘিরে অভিনব ভাবনার আগমন ঘটেছে, জমিদারি আঙিনায়।এবছরও গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে, অভিনবত্বকে সঙ্গী করে জমিদার বংশের প্রাচীন রীতিনীতি মেনে সাবেকি পুজোয় মেতে উঠবেন তারা, জানান পরিবারের সদস্যরা।
0 Comments