"ডাক্তার সে তো মানুষ নয়, আমাদের কাছে সে তো ভগবান!! "
প্রকৃত চিকিৎসক সত্যই আমাদের কাছে ভগবান।। কিন্তুু প্রশ্ন হচ্ছে, তিনি ই যদি প্রকৃত চিকিৎসক না হন? তাহলে?
তাহলে আর কি?দুর্ভোগের শেষ নেই।এই ধরুন চিকিৎসা র নামে একের পর এক টেস্টের রিপোর্ট করতে হবে, তাও সেই সকল টেস্ট ডাক্তার বাবুর নির্দিষ্ট করা ল্যাব থেকে করাতে হবে, কিংবা এক ওষুধের বদলে অন্য পাঁচটি ওষুধ দেওয়া হবে, পেশেন্টের সিচ্যুয়েশান না দেখে অপারেশান হয়ে যাবে এই রকম সব।।আর হবেই না কেন?এই এত পরিমান টাকা চিকিৎসক হবার পরীক্ষাতে যারা ইনভেস্ট করছে, ধরুন আগামী কয়েকবছর তারা পড়াশুনাতেও তারা বিভিন্ন উপায়ে অনেক খরচ করবে এটা তো স্বাভাবিক নাকি? তার পর সবমিলিয়ে সার্টিফিকেট যখন হাতে উঠবে তখন ইনভেস্ট হয়ে যাবে প্রচুর, তখনও রিটার্ন কিন্তু নীল।তাহলে? তখন তাকে তো সুদে আসলে এই ইনভেস্টেড মানি টা তুলতে হবে, সে এটা চাইবে এটাও স্বাভাবিক।
তাহলে অস্বাভাবিক কি? অস্বাভাবিক হলো, যত এই ধরনের স্ক্যাম হবে ততই দেশ পিছাবে,যত এইভাবে দেশের মেধার প্রকৃত মূল্যায়ণ হবে না ততই বাড়বে ডিপ্রেসান,
ততই স্বপ্ন দেখা বন্ধ করবে গ্রাম- মফ:স্বলের ছেলে মেয়ে গুলো।তাতেও কিন্তুু আখেরে লাভ হবে অর্থান্বেষী মানুষদের ই। বিভিন্ন সংস্থা র কম্পিটেটিভ স্টাডির প্যাকেজ বাড়বে, বিজ্ঞাপন আরো বাড়বে আর যত এই বিজ্ঞাপন বাড়বে আমার তো মনে হয় ততই ব্যাস্তানুপাতে কমবে গ্রাম মফ:স্বলের ছেলে মেয়ে গুলোর নিজের প্রতি আস্থা।
এখন ই লক্ষ লক্ষ টাকার প্যাকেজ সিলেকশান করেও,স্টাডি করেও, অনেকে র্যাঙ্ক পায়না আবার আমাদের গৌতমের ((( গৌতম,বিশপুরের শান্ত স্বভাবের এক পড়ুয়া, আর্থিক অনটনে বড়ো হওয়া,তারপর একাদশে টাকী সরকারী বিদ্যালয়ে ভর্তি,সেই সুত্রে আমার কাছে প্রাইভেট পড়তো, খুব কষ্ট করতো, উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো নম্বর, পরের বছর ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরনের পরীক্ষায় সাফল্য, বর্তমানে কোলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পাঠরত)))মতো অনেক ছেলেরা গ্রাম থেকে উঠে এসে মর্যাদা ছিনিয়ে নেয়,নিজেদের মেধায় আর একাগ্রতায়।একটা গৌতমের সাফল্য এরকম একশ গৌতম কে স্বপ্ন দেখায় চিকিৎসক হবার।তেমন ই NEET এ যদি সত্যই অত বিপুল পরিমান অঙ্কের টাকা, প্রশ্নপত্র কিনতে খরচ হয়ে থাকে, তাহলে এরকম একটা বছর, অনেক কোটি পতি বাবার ছেলে মেয়েকেও স্বপ্ন দেখাবে ডাক্তার হবার । আর তাহলে আগামী বর্ষে আই.পি.এল অকশানের মতো দামও উঠবে তা বলাই বাহুল্য।
বছর কয়েক আগে মাকে ডাক্তার দেখাতে এক নামযাদা মেডিসিন শপে এক চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলাম।এক মুহুর্তে তার ঔষধ আর তার বার্তা লাপ ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলো, বাড়ি এসে দেখেছিলাম জনৈক ডাক্তারের প্রেসক্রিপশানে রেজিস্ট্রেশান নম্বর নেই,সেই নিয়ে জানতে চেয়েছিলাম।পরে একটা রেজিষ্ট্রেশন নম্বর পেয়েছিলাম বটে, তবে এক চিকিৎসক বন্ধুর সহায়তায় সেটা পোর্টালে চেক করিয়ে দেখেছিলাম সেটি ও জাল।এই সমস্ত ডাক্তারের জন্য কোথাও না কোথাও ডাক্তার শব্দ টার কি মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়না? এই বিষয় টা নীচু লেভেলের জালিয়াতি তবু আমাদের চোখে পড়েছে, সজাগ হয়েছি, এবার এটা যদি উপর লেভেল থেকে ই হতে থাকে তাহলে তো এর পর সজাগ হওয়ার ও কোনো অপশান ই নেই?
আগামী বছর দশ পরে কাকে ভরসা করে চিকিৎসা করাবেন? এরপর তো তাহলে প্রকৃত ডাক্তার বাছতে রোবট ব্যাবহার করতে হবে বা সাইবার সিকিউরিটি কোর্সের মতো হয়তো ম্যানুয়াল ফ্রড ভেরিফিকেশান কোর্স নামে নতুন কোনো কোর্স আসবে। তাই ই হবে কোনদিন,টেকনোলজির যুগ।তবে ততদিন??
অভিব্যক্তি সৌরভ
0 Comments