পা ভ্যানে সংসারের ভার বহন করেন বাবা,মায়ের সঙ্গে বিড়ি বাঁধার কাজ করেও উচ্চমাধ্যমিকে ৯৫.৮ শতাংশ নম্বর রুবিনার।
THE BENGALEE
দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে উচ্চ মাধ্যমিকে ৯৫.৮ শতাংশ নম্বর পাওয়া রুবিনা ভবিষ্যতে ভূগোলের শিক্ষিকা হতে চায় । রুবিনা খাতুন,উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদের বরুনহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। এবছরের উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০০ র মধ্যে ৪৭৯ নম্বর পেয়েছে রুবিনা।ভূগোলে তার প্রাপ্ত নম্বর ৯৯।
নুন আনতে পান্তা ফুরানো সংসারে , সম্বল বলতে একটি আটচালা ঘর ও একটি পা ভ্যান। অভাব নিত্যসঙ্গী হওয়ায়,প্রাথমিক শিক্ষার পর পড়াশুনার ইচ্ছা থাকলেও আর পড়াশুনা করার সুযোগ পাননি রুবিনার বাবা রব্বানী সরদার। নিজের জীবনে পড়াশুনার সুযোগ না হলেও নিজের মেয়ের শিক্ষা কে পরিপূর্ণতা দিতে বদ্ধ পরিকর ছিলেন রুবিনার বাবা। এ কাজে যোগ্য সহযোগিতা করেছেন রুবিনার মা শাকিলা বিবি ও।বিড়ি বেঁধে সংসারের ব্যায় ভার থেকে মেয়ের পড়াশুনার খরচের কিছুটা জোগাড় করেছেন তিনি। সংসারের ব্যায় বার, নিজের পড়াশুনার খরচ চালাতে পড়াশুনার সময় বাদে অন্য সময়ে মায়ের সঙ্গে বিড়ি বাঁধার কাজ করে রুবিনাও।
সেরার তালিকায় হাসনাবাদের রুবিনা
বাবা মায়ের কষ্টের যোগ্য প্রতিদান দিয়ে ভুগোলের শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখা রুবিনা, তাই বলছে " ইচ্ছা থাকলে সবই হয়"।আগামীর পরীক্ষার্থদের জন্য রুবিনা বলে, "নিজেকে হার্ড ওয়ার্ক করতে হবে, আর লক্ষটা ঠিক রাখতে হবে যে বাবা মায়ের মুখ রাখতে হবে।"তার কথায়, কেউ যখন অনেক কিছু এক্সপেক্ট করে কারো কাছে,তার নিজেরই ইচ্ছা থাকা চাই সেগুলো পুরন করার, জেদ থাকাটা দরকার সঙ্গে গাইডেন্স টা জরুরী"।রুবিনার মা, সাকিলা বিবি জানান, নবম শ্রেণী থেকে মেয়ের পড়াশুনার জন্য তার বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গৃহশিক্ষকরা সবরকমের সহযোগিতা করেছেন।
THE BENGALEE
ছোট বেলা থেকেই পড়াশুনায় মেধাবী ছিলো মেয়ে, ফাঁকা সময়ে বিড়ি বাঁধার কাজ করতো ও সংসারের কাজে হাত লাগাতো রুবিনা। মেয়ের পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সহযোগিতার আবেদন জানান রুবিনার বাবা রব্বানি সরদার।রুবিনার গৃহশিক্ষক তাপস রায় জানান - "ও ছোট থেকে খুব মেধাবী, আর্থিক অবস্থা খুব ভালো নয়।আমরা সবাই রুবিনার পাশে আছি।উচ্চ শিক্ষার জন্য সব রকম সাহায্য করবো।"
রবিনার সাফল্যে খুশি তার পরিবার পরিজন সহ বিদ্যালয়ে শিক্ষক শিক্ষিকা সহ এলাকার মানুষ সকলেই।বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তার সঙ্গে দেখা করে তাকে বাহবা জানিয়ছেন অনেকেই।রুবিনার কথায়, "আমি ভালো ফল প্রত্যাশা করেছিলাম, আমার এই ফলাফলে আমি যতটা খুশি,আমার বাবা মা তার থেকেও বেশী খুশি।"
আগামী দিনে শিক্ষিকা হয়ে বাবা মায়ের অবলম্বন হয়ে উঠতে চায় হাসনাবাদের রুবিনা খাতুন।।
0 Comments